Dr. Mir Rasekh Alam Ovi

মলদ্বারে চুলকানি একটি সাধারন ঘটনা কিন্তু কখনও কখনও এটি অত্যন্ত অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর হয়ে ওঠে। সাধারনত মলদ্বার ও এর আশেপাশে চুলকানি হয়ে থাকে। পুরুষরা নারীদের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর কোন কারন খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অপরিষ্কার থাকা এবং অতিরিক্ত মলদ্বার পরিষ্কার দুটোই মলদ্বারে চুলকানি করতে পারে। কিছু কিছু সুগন্ধি সাবান, রঙিন, সুগন্ধি ও খসখসে টয়লেট পেপার ব্যবহার চুলকানির অন্যতম কারন। যারা অতিরিক্ত ঘামান তাদের চুলকানি হবার সম্ভাবনা বেশি।

ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কৃমি চুলকানির প্রধান কারন। এক্ষেত্রে বাচ্চারা রাতে ঘুমের সময় মলদ্বার চুলকায়। বড়দেরও কৃমি হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক এর সংক্রমণেও চুলকানি হয়। সাধারনত মহিলারা তুলনামূলক বেশি ছত্রাকের আক্রমনের শিকার হন। যৌনবাহিত রোগও মলদ্বারে চুলকানির কারন হতে পারে।

যে সমস্ত চর্ম রোগে শরীরে চুলকানি হয় (যেমন-অ্যালার্জি) সবগুলোই মলদ্বারে চুলকানি করতে পারে। সোরিয়াসিস এবং কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস চুলকানির অন্যতম কারন। কফি, চকলেট, বিয়ার, বাদাম, টমেটো, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার এবং মশলাদার খাবার থেকেও চুলকানি হয়। ঔষধের মধ্যে লেক্সেটিভ ও এন্টিবায়োটিক মলদ্বারে চুলকানির কারন হতে পারে।

সার্জিকাল রোগগুলোর মধ্যে সাধারনত এনাল ফিসার, পাইলস, ফিস্টুলা মলদ্বারে চুলকানি করে থাকে। এছাড়া আইবিএস, ডায়রিয়া এবং মল ধরে রাখার অক্ষমতাজনিত কারনেও চুলকানি হয়। খুব অল্প ক্ষেত্রে হলেও মলদ্বারের ক্যান্সার চুলকানির কারন। ডায়বেটিস কখনও কখনও চুলকানির কারন হতে পারে।

চুলকানির সাথে মলদ্বারে ভেজা ভেজা ভাব, জ্বালাপোড়া ও মলদ্বার লাল হয়ে যেতে পারে। অধিকাংশ চুলকানির জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। সাধারনত ঘরে বসে কিছু নিয়ম মেনে চুলকানি থেকে রেহাই পাওয়া যায়। যেমন-

• চুলকানি হয় এমন খাদ্য এড়িয়ে চলা
• মলত্যাগ ও অতিরিক্ত ঘামের পর মলদ্বার ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার ও শুষ্ক রাখা
• সুতি কাপড়ের ঢিলাঢালা অন্তর্বাস ব্যবহার করা
• রঙিন, সুগন্ধি ও খসখসে টয়লেট পেপার ব্যবহার না করা
• সুগন্ধি সাবান ব্যবহার না করা

তবে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন এমন উপসর্গগুলো হল –

• তীব্র ও সবসময় চুলকানি হওয়া
• যদি চুলকানির সাথে রক্ত যায়
• সংক্রমণ (ইনফকশন) ঘটলে
• মলদ্বারে চাকা থাকলে

এসব উপসর্গ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে চুলকানির কারন অনুযায়ী চিকিৎসা নেয়া উচিত। চিকিৎসকের যথাযথ পরামর্শ এবং নিজের যত্ন নিয়ে বেশিরভাগ রোগী মলদ্বারের চুলকানি থেকে সম্পুর্ণ মুক্তি পেতে পারেন।